শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার আলুটিলায় চলছিলো এক ধর্মীয় গুরুর দাহক্রিয়া। যে কারণে বৌদ্ধ বিহার এবং এর আশপাশে ছিলো হাজারো মানুষের ভিড়। বসেছিলো মেলা।
এর মধ্যে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিলো আট প্রাণ। নিহত ব্যক্তি হলেন মহালছড়ির চোংড়াছড়ি এলাকার নেইম্রা মারমা (৪০), তার দুই মেয়ে টুনটুনি মারমা (৬) ও ববি মারমা (১৩), দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী অংক্যজিং মারমা (১৭) ও উছনু মারমা (১৭), রামগড় এলাকার সাথোয়াইপ্রু মারমা (১৫), উক্রাসিং মারমা (৫) ও পুনু মারমা (১৮)।
আহত হয়েছেন ১৪ জন। তারা হলেন উমেচিং মারমা (৩০), শুকেশ ত্রিপুরা (২৯), পিপি রাণী ত্রিপুরা (২৪), চিংহলাউ মারমা (১৬), শান্তি রঞ্জন চাকমা (৪৫), রানাউ মারমা (২৬), চিংকিতলা মারমা (৮), জনি মারমা (৩০) ও রনি মারমা (৩০)। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে বালু বোঝাই ট্রাক নিয়ে আসছিলেন চালক মো. পলাশ। সহকারী চালক (হেলপার) ছিলো ১৬ বছর বয়সী সুমন। পথে জালিয়া পাড়া এলাকায় এসে চালক সুমনের হাতে গাড়ির চাবি বুঝিয়ে দিয়ে নেমে যাওয়ার পরে সুমন ট্রাক নিয়ে খাগড়াছড়ি আসছিলো।
আটক সুমন পুলিশকে জানায়, আলুটিলা পাহাড় নামতেই দেখি মানুষের ভিড়। সাবধানে নামছিলাম, হঠাৎ ট্রাকের ব্রেক কাজ না করার গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যায়। এতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। হাসপাতালে হাজার হাজার মানুষের ভিড় সামলাতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়। এক পর্যায়ে হাসপাতালের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়, প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. নয়ন ময় ত্রিপুরা বলেন, ‘আহতদের শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। আমাদের ব্লাড ব্যাংক না থাকায় শুরুর দিকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। পরে স্বেচ্ছায় প্রচুর মানুষ রক্ত দান করায় পরিস্থিতি সামলে নেওয়া গেছে।
এদিকে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন চালক সমবায় সমিতির সভাপতি মনতোষ ধর। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি ট্রাক চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।